বিদেশে টাকা পাচারে টিআইবির উদ্বেগ
আমদানি-রফতানির আড়ালে বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতি বছর প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচারের যে তথ্য গ্লোবাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে তা উদ্বেগজনক বলে উল্লেখ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
সংস্থাটি বলছে, এখনই নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে আগামীতে বাংলাদেশের জন্য তা অশনি সংকেত হয়ে দাঁড়াবে। এক্ষেত্রে আর্থিকখাতে আস্থা ও শৃঙ্খলা ফেরাতে প্রতিষ্ঠানগুলোর জোরদার ভূমিকা পালনের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা।
বাংলাদেশ থেকে আমদানি রফতানির আড়ালে ২০১৫ সালে, শুধু ১ বছরেই প্রায় ১ লাখ কোটি টাকা পাচার করেন বাংলাদেশিরা। গ্লোবাল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের দেয়া ১৩৫টি দেশের বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে আসে। ২০০৮ থেকে ১৫ সাল পর্যন্ত ৭ বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন দেয়া হয়। এতে ২০১৬, ১৭ এবং ২০১৪ সালের তথ্য দিতে পারেনি জিএফআই। এই ঘটনাকে উদ্বেগজনক এবং অশনি সংকেত হিসেবে দেখছে টিআইবি। প্রতিবেদনে যে পরিমাণ অর্থের কথা বলা হয়েছে, প্রকৃত চিত্র তার চেয়েও অনেক বেশি বলেও মনে করে টিআইবি।
ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, অর্থ পাচার হয়, কিন্ত একটু ডাইমেনশন হচ্ছে। সব মিলিয়ে আমাদের দেশের জাতীয় আয়ের একটা বড় অংশ পাচার হচ্ছে, তাই এটা নিয়ে তো প্রশ্ন থাকতেই পারে। আমাদের জিডিপির রেশিও বিশ্বের সর্বনিন্ম পর্যায়ে রয়েছে।
প্রতিবেদন দেখা যায়, আমদানি-রফতানি বাণিজ্যের আড়ালে গড়ে প্রতি বছর প্রায় ৬৪ হাজার কোটি টাকা পাচার হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। যা মোট বাণিজ্যের ১৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। মেশিনারিজ, মেডিকেল সরঞ্জাম, প্লাস্টিক, জ্বালানি থেকে পাচারের পরিমাণ সবচেয়ে বেশি। অর্থ পাচার রোধে ব্যাংকগুলোকে আরো সতর্ক হয়ে জোরদার ভূমিকা পালনের পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের।
অর্থনীতি বিশ্লেষক সাব্বির আহমেদ বলেন, একদিকে যেমন দেশ থেকে বৈদেশি মুদ্রা চলে যাচ্ছে। অন্য দিকে একটা ট্রেড ইনব্যালেন্স তৈরি হচ্ছে। ব্যাংকগুলো যখন এলসি ওপেন করছে। তাদেরকে আরও সচেতন হতে হবে। এবং যে মেশিনারিজ বিদেশ থেকে আসছে তার মূল্য সঠিক কি না সেটা নিশ্চিত হতে হবে।১৩৫টি দেশের মধ্যে অর্থ পাচারের তালিকায় বাংলাদেশ ১২ নম্বরে এবং আফগানিস্তান শীর্ষে।